জীবনের ৩৪টা বছর নষ্ট করেছি একটা ভ্রান্তির মধ্যে: বাঁধন
লাক্স তারকা ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। কাজের বাইরে মাঝে মধ্যেই পোশাক নিয়ে সমালোচিত হতে হয়েছে তাকে। শুধু তাই নয়, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নানা জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে।
সমাজের অসঙ্গতি নিয়েও সরব তিনি। তাঁর জীবনের বাঁধা-বিপত্তি ও সেসব কাটিয়ে উঠার গল্প বলেছেন সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে।গণমাধ্যমে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, `জীবনের ৩৪টা বছর নষ্ট করেছি একটা ভ্রান্তির মধ্যে। আর ভ্রান্তির মূলে আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থা। আমি সমাজের ছকে বাঁধা একজন আদর্শ নারীই হতে চেয়েছি।
কারণ ছোট থেকে আমাকে তাই শেখানো হয়েছিলো। আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থা পুরোপুরি পুরুষতান্ত্রিক। আর সেই পুরুষতান্ত্রিকতাই আমাকে শিখিয়েছে, আমি যেন সমাজের ছকে বাঁধা আদর্শ নারী হই। এছাড়া মুক্তির আর কোন পথ নাই।’
বাঁধন বলেন, `আমি বুঝতেই পারলাম না আমার স্বাধীনতা কি! আমার অধিকার কি! আমি জানতেই পারলাম না যে, আমিও একজন মানুষ। জীবন থেকে ৩৪টা বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর আমি এই সত্যটা উপলব্ধি করতে পারলাম।শুধু তাই নয়, আমি আমার ডিভোর্সের কথাও কাউকে বলতে পারিনি।
প্রতিনিয়তই অত্যাচারিত হওয়া সত্বেও তাকে আমার হুজুর হুজুর করে চলতে হয়েছে। সে আমাকে পারিবারিক, সামাজিক এবং মানসিকভাবে একের পর এক নির্যাতন করেছে আর আমি সব সহ্য করে গেছি।কারণ আমার সেই শিক্ষা। আমি জেনে এসেছি যে, সহ্য করে যাওয়াটাই হচ্ছে একজন আদর্শ নারীর কাজ। সব মেনে না নিলে আমি একজন ভালো নারী হতে পারবো না। আমি তিনটি বছর কাউকে বলতে পারিনি যে, আমার ডিভোর্স হয়েছে।`
তিনি আরও বলেন, `সে আমাকে শুধু হেনস্তা করেই ক্ষান্ত হয়নি, হাত বাড়ালো আমার মেয়ের দিকে। তাকে ছিনিয়ে নিতে চাইলো আমার কাছ থেকে। তখন আমি আর মেনে নিতে পারলাম না।সে এবং তার নতুন স্ত্রী মিলে আমাকে সিদ্ধান্ত জানায় যে, তারা আমার বাচ্চাটাকে নিয়ে তাদের কাছে রাখবে। তারা যে এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে, সেখানে আমার মতামতের কোন তোয়াক্কাই করেনি।
তারা সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে যে, এটা মেয়ের বাবার সিদ্ধান্ত। আর আমাকে সেটা মেনে নিতেই হবে। দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, এই বিষয়টা নিয়ে আমি আইনজীবী, থানা থেকে শুরু করে যেখানেই গেছি,সবারই এক কথা- সন্তানের ব্যাপারে বাবাই সিদ্ধান্ত নেবে। একপ্রকার ছিনিয়ে নেওয়ার মতো করেই আমি আমার মেয়ের অভিভাবকত্ব পেয়েছি।`