ধসে যেতে পারে ভারতের অর্থনীতি

করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে ধসে যেতে পারে ভারতের অর্থনীতি। সোমবার এমন সতর্কতা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অব কমার্স। এর নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইরন ব্রিলিয়ান্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কোম্পানি ভারতীয় কর্মীদের তাদের কাজে ব্যবহার করে। এ জন্য ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে। তিনি বলেন, ভারতের পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার আগেই ভয়াবহ অবনতি ঘটবে।

এ অবস্থায় ভারতের অর্থনীতির জন্য বড় রকম ঝুঁকি রয়েছে। ভারত বিশেষ করে রাজধানী নয়া দিল্লি যখন এক ‘নরক-সময়ে’ অবস্থান করছে তখন এমন সতর্কতা দিলো যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অব কমার্স। এখনও ভারতের অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপ‚র্ণ। সোমবারও সেখানে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড গড়েছে। এ সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার ৯৯১। মারা গেছেন ২৮১২জন। হাসপাতালে ঠাঁই নেই।

তাই হাসপাতালের বাইরেই মারা যাচ্ছেন অনেক রোগী। কর্নাটকের অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। শ্মশানে লাশ দাহ করার জন্য সিরিয়াল পড়ে গেছে। স্থান সংকুলান হচ্ছে না। একের পর এক চিতা জ্বলছে। কিন্তু তাতেও সামাল দেয়া যাচ্ছে না পরিস্থিতি। বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করছে।

তারা লাশ বাড়িতে নিয়ে নিজস্ব কোনো ফার্মে বা বাগানে দাহ করছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। এতে বলা হয়, আকাশ হাসপাতালের ড. শারাং সাচদেব স্কাই নিউজকে বলেছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটময়। এ যাবত আমরা যা দেখেছি, তার মধ্যে এই মহামারি এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। আগামী দু’সপ্তাহ হতে যাচ্ছে নরক সময়। একজন যুবতীর দিকে ইশারা করে তিনি বলেন, এই যুবতীকে এখনই আইসিইউতে নেয়া দরকার। তিনি দু’দিন ধরে বাইরে রয়েছেন।

কারণ আইসিইউ বেড নেই। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা বলেছেন, তার রাজ্যের পারিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সেখানে শ্মশানে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। গোরস্তানে হচ্ছে না জায়গা। লাশের পর লাশ যাচ্ছে সেখানে। ব্যাঙ্গালোরে আছে ৭টি শ্মশান। দিনরাত ২৪ ঘন্টা তাতে চিতা জ্বলছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে চারগুন গতিতে সেখানে মৃতদেহের সৎকার করা হচ্ছে। এর ফলে গাজিয়াবাদে চিতায় কাঠের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে লাশ প্লাটফরর্মের ফাঁকে দাহ করা হচ্ছে।

এমনকি একটি বৈদ্যুতিক চুল্লি ভেঙে পড়েছে। এখন সেটা মেরামত করা প্রয়োজন। আরেকটি বৈদ্যুতিক চুল্লির চিমনি অব্যাহতভাবে অত্যধিক তাপে ফেটে গেছে। এর ওপর সামনের কয়েকদিনে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে বলে অশোকা ইউনিভার্সিটির বায়োসায়েন্সের পরিচালক শাহিদ জামিল বলেছেন। তিনি সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, আগামী দু’সপ্তাহে দিনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখে পৌঁছে যাবে। তিনি বলেন, টিকাদান কর্মস‚চি হাতে নেয়া সত্তে¡ও আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকবে।

শুধু ভারত নয়, দরিদ্র কিছু দেশেও করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে। রোববার ইরাকের রাজধানী বাগদাদে একটি করোনা হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের কমপক্ষে ৮২ জন মারা গেছেন। এর ফলে সেখানে শীর্ষ স্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওদিকে ভারতের ভয়াবহ অবস্থায় তাকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

তিনি বলেছেন, টিকা তৈরির কাঁচামাল, টেস্ট কিট, ভেন্টিলেটর এবং সুরক্ষা সামগ্রী পাঠাবেন ভারতে। ফ্রান্সও সহায়তা পরিকল্পনার কথা বলেছে। মেডিকেল সরঞ্জাম নিয়ে বৃটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে নয়া দিল্লির উদ্দেশে ছেড়ে এসেছে। তাদের সহায়তার মধ্যে রয়েছে ভেন্টিলেটর, ৪৯৫টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর।

Related Articles

Back to top button
error: Alert: Content is protected !!