‘অনেক বেঁচেছি’, কমবয়সী রোগীর জন্য হাসপাতালের শয্যা ছেড়ে ‘মৃত্যুবরণ’
নিজের জীবন দিয়ে এক মধ্যবয়সী নাগরিককে বাঁচানোর চেষ্টা করে গেলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের এক সদস্য। ৪০ বছরের এক ব্যক্তির জন্য হাসপাতালে শয্যা ছেড়ে দিয়েছিলেন ৮৫ বছরের নারায়ণ দাভালকর। মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) মৃত্যু হয় তার।
গত ২২ এপ্রিল ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে ইন্দিরা গান্ধী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল কোভিড আক্রান্ত নারায়ণ দাভালকরকে। শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল তার। তবুও হাসপাতালে শয্যা ছেড়ে দিতে চান তিনি। চিকিৎসকরা নিষেধ করলেও শোনেননি দাভালকর।
কারণ, হাসপাতালে দাভালকর দেখতে পান, নিজের ৪০ বছরের স্বামীকে ভর্তি করানোর জন্য মিনতি করছেন তার স্ত্রী। এই দৃশ্য দেখার পরই দাভালকর সিদ্ধান্ত নেন শয্যা ছেড়ে দেবেন। চিকিৎসকদের তিনি বলেন, ‘আমার বয়স ৮৫। অনেক বেঁচেছি। ওই যুবকের জীবন বাঁচানো বেশি দরকার। ওদের ছেলেমেয়েও আছে। দয়া করে আমার বেডটা ওকে দিন।’
দাভালকর থাকতে না চাওয়ায় হাসপাতাল তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তার তিন দিন পরে মৃত্যু হয় দাভালকরের। তার মেয়ে আশাবরী কোটিওয়ানের কথায়, ‘অনেক কষ্ট করে ২২ এপ্রিল হাসপাতালে একটা শয্যা পেয়েছিলাম। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর বাড়িতে ফিরে আসেন বাবা। পরিবারের সঙ্গে শেষ মুহূর্ত কাটাতে চান বলে আমাদের জানান।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দাভালকর শয্যা ছেড়ে দিয়েছেন বলে ওই ব্যক্তিকে তা দেওয়া হবে, এমনটা রীতি নেই। কাকে শয্যা দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরাই। দাভালকর ক্যাসুয়ালটি বিভাগে ছিলেন, তাকে কোভিড-১৯ ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তবে, কেউ স্বেচ্ছায় শয্যা ছেড়ে দিলে অন্য কাউকে ভর্তি নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।দাভালকার রাজ্য সরকারের পরিসংখ্যান দফতরে কর্মরত ছিলেন। ছিলেন আরএসএসের সক্রিয় সদস্যও।