ফুটপাত থেকে মিঠুনের রাজপ্রাসাদ, সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে মহাগুরুর দত্তক কন্যার জীবনকাহিনি
সে বহু বছর আগেকার কথা। কলকাতার একটি ডাস্টবিনের পাশে একটি কন্যা সন্তানকে পড়ে থাকতে দেখতে পান কয়েক জন পথচারী। হয়তো কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে তাঁকে তার মা বাবা ফেলে দিয়ে গিয়েছিলেন ওইখানে।
তখনই খবর যায় পুলিশের কাছে। উদ্ধার করা হয় ওই শিশু কন্যাটিকে। রাখা হয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দায়িত্বে। তার পরেরক্ষণেই খবর এসে পৌঁছয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর কানে।মনের মধ্যে একটি কন্যা সন্তান পাওয়ার লোভ তাঁর অনেকদিনেরই ছিল, কথাটা শোনার পরই তিনি আর নিজেকে সামলাতে পারেননি। থাকতে না পেরে সে দিনই ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সঙ্গে যোগাযোগ করেন অভিনেতা।
তারপরেই ওই শিশুকে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মিঠুন এবং তাঁর স্ত্রী যোগিতা বালি।জানা গিয়েছিল, তিনি কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি, তাই শীর্ণকায়, রুগ্ন ওই শিশুটিকে সারা রাত কোলে নিয়েই বিভিন্ন আইনি সমস্যা মিটিয়েছিলেন অভিনেতা ও অভিনেতার স্ত্রী।কাজ শেষ হওয়ার পর সেই কন্যাকে নিয়ে তাঁরা বাড়ি যান। দেন মিঠুন চক্রবর্তী নিজের পরিচয়, নাম রাখেন দিশানী চক্রবর্তী। তিন দাদার একমাত্র বোন দিশানী, যাকে বলে এক্কেবারে আদুরেভাবে মানুষ করেছেন মিঠুন।
মিঠুনের পরিবারে আসার পর থেকেই সকলের প্রিয় হয়ে উঠেছেন ছোট্ট দিশানী।তাঁর বাবার সঙ্গেও দিশানীর দারুণ সম্পর্ক। তিন দাদা মহাক্ষয়, উষ্মে এবং নমশীর তাঁকে সব সময় আগলে বড় করেছেন।কিন্তু সে এখন কোথায়! জানেন কি! সেই ছোট্ট দিশানী এখন রীতিমতো যুবতী। শোনা যাচ্ছে এবার সিনেমাকেই নিজের ধ্যানজ্ঞান করতে চান তিনি, তাই সেইমতো প্রস্তুতি নিতেই দিশানী নিউ ইয়র্ক ফিল্ম অ্যাকাডেমি থেকে ফিল্ম স্টাডি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
সদ্য যৌবনে পা দেওয়া দিশানী এখন এডাল্ট। তাঁর ছোট থেকেই বি টাউনের তাবড় তাবড় তারকা, পরিচালক, প্রযোজকদের সঙ্গে বেশ আলাপ। আগামী দিনে লম্বা দৌড়ের ঘোড়া হতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।২০১৭ সালে Holy Smoke নামে একটি ছবির মাধ্যমে অভিনয় দুনিয়ায় পা রাখেন দিশানি। যে ছবির পরিচালক ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তীর ছেলে উশমে চক্রবর্তী অর্থাৎ তাঁর বড় দাদা।
তারপর বেশকিছু শর্টফিল্মেও অভিনয় করেছেন দিশানি চক্রবর্তী। যার মধ্যে ‘আন্ডারপাস’, ‘সাটল এশিয়ান ডেটিং উইথ পিবিএম’ অন্যতম। আসলে আগে লাইমলাইট থেকে আসতে সবাই ভয় পেতেন সে যেই হোক, স্টার কিড বা আমজনতা।কিন্তু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেটিকে থাকতে গেলে যে জনসংযোগ রাখতে হবে। তা বিলক্ষণ বুঝে গিয়েছেন মিঠুন-কন্যা। তাই ইদানিং সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ অ্যাক্টিভ হয়েছেন তিনি। আশি হাজারের বেশি অনুগামী তাঁর ইনস্টাগ্রামে।